স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়ার কারণ সমূহ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় সমূহ।
·
মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামতগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত হলো জ্ঞান বা স্মৃতিশক্তি। এটি এতই প্রয়োজনীয় জিনিস যে একবার হারালে চাইলেই আবার দ্রুত ফিরে পাওয়া যায়না। যে একবার হারিয়ে ফেলেছে একমাত্র সেই বুঝে এর কদর কতটা। যদি কারো স্মৃতি লোপ পায় সে যেন অসহায় মানুষের মতো। আজকে আমরা আলোচনা করব যেসব কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পায় এবং সেসব সমস্যা থেকে বাচার উপায় সমূহ নিয়ে। এই লিখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেউ পড়লে আশা করি কোনো একটি সমাধান পেয়ে যাবেন ইনশা”আল্লাহ। সাওয়াবের নিয়তে লিখাটি শেয়ার করতে পারেন আপনার বন্ধুদের মাঝে।
যেসকল কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পায়ঃ
v
গোনাহ করাঃ স্মৃতিশক্তি
লোপ পাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হলো গোনাহ করা। জ্ঞান হলো এক আলোকবর্তিতার ন্যায়। যার মধ্যে থাকে সে শক্তিশালী এবং আলোকিত। কিন্তু যেখানে গোনাহের আস্তানা কিংবা অন্ধকার সেখানে আলো থাকে না। তাই আল্লাহ যে কাউকেই তার জ্ঞান,আলো যেখানে সেখানে দান করেন না। তাই এটি স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার অন্যতম একটি কারণ।
v
হস্তমৈথুন করাঃ এটি
একটি বড় ধরনের গুনাহের কাজ তো বটেই অনেক সমস্যার কারণ ও। অনেক গবেষকের মতে এটি মানুষের জৈবিক চাহিদা মিটানুর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়। এর মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি লপ পাওয়া সহ মেরুদন্ডের ব্যথা শরীর হাড়ের জয়েন্টের ব্যথাও হয়ে থাকে। তাছাড়া এটি একটি মারাত্বক বদ অভ্যাসের কারণ। এর ফলে মানুষকে আরো গুনাহের দিকে দাবিত করে। ফলে অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
v
দীর্ঘ সময় না ঘুমানো বা রাত জাগাঃ আমাদের
অনেকেরই বাজে অভ্যাসের মধ্যে একটি হলো রাত জাগা। বর্তমান সময়ে এটি একটি ট্রেন্ড হয়ে দাড়িয়েছে। যে যতো রাত জাগতে পারে সে যেন ততো স্মার্ট এখন। রাত জেগে সিনেমা,নাটক দেখা কিংবা আড্ডা দেয়া এটা এখন আধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে । অধিক রাত জাগার ফলে মানুষের ব্রেইনে অনেক বেশি চাপ প্রয়োগ হয়। এতে
মানুষের ব্রেইনের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হয়। এই অবস্থা লাগাতার চলতে থাকলে স্মৃতিশক্তি খুব দ্র্ত লোপ পেতে থাকে। কাজে মনোযোগ না থাকা,পড়াশোনায় অনিহা সহ
অনেক সমস্যার কারণ এটি। এছাড়াও যদি রাত কম জাগা এবং বেশি জাগা মানুষের মফধ্যে জড়িপ করা হয় ,সেখানে রাত কম জাগা কিংবা সকালে ঘুম থেকে দ্রুত উঠা ব্যাক্তিরা অনেকাংশে অনেক দিক ফিয়ে এগিয়ে থাকবে।
v
নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণঃ মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন নষ্ট হওয়ার জন্য নেশাই যথেষ্ঠ। এটি মস্তিস্ককে মন্থর করে দেয়। লাগাতার নেশা গ্রহণের ফলে ব্রেইনের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা শূণ্যের কোঠায় চলে আসে। মানুষের স্মৃতি লোপ পেতে এটি খুব গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে।
v
মুখের দাঁতের ভুল অপারেশনঃ আমাদের
অনেকেরই দাঁতের সমস্যা হয়। এখনকা্র দিনে
এটি একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে । বিশেষ করে বাচ্চাদের এটি কমন সমস্যা। তাই এসব সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকেই
দাঁত
ফেলা দেয় কিংবা কেটে ফেলে, দাঁতের রোট ক্যানেল করা কিংবা ক্যাপ বসিয়ে থাকেন। আবার অনেকে অতিরিক্ত দাঁত লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা কী জানি যে আমাদের দাঁতের সাথে মস্তিষ্কের প্রত্যক্ষ এবং পরক্ষ অনেক সংযোগ আছে? প্রতিটি
দাঁতের সাথে মস্তিষ্কের সংযোগ যার কোনো একটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে ঘটতে পারে স্মৃতি লোপ। এমন অনেকে আছেন দাঁত ফেলানোর পর পাগল হয়ে গেছেন , আবার অনেকের স্মৃতিশক্তি আগের মতো প্রখর নেই। তাই খুব আবশ্যকীয় না হলে দাঁত ফেলান উচিৎ নয়।
v
বৃদ্ধ হলেঃ আমাদের
বয়সের সাথে সাথে স্মৃতিশক্তিও লোপ পেতে শুরে করে। তখন চাইলেও আগের মতো ধরে রাখা যায়না। এটা হচ্ছে প্রকৃতিগত একটি প্রক্রিয়া। তবে সবার ক্ষেত্রে এক নয় কিছু ব্যাতিক্রম হতেও পারে। তাই এই সময়ে এসে কারো স্মৃতিশক্তি লোপ পেলে চিন্তার কোনো কারণ নেই।
v
অতিরিক্ত কথা বলাঃ মানুষের
সবচেয়ে বেশি শক্তির প্রয়োগ হয় বেশি কথা বললে। এতে মানুষের ব্রেইনে চাপ বাড়ে এবং মস্তিষ্কের শক্তির অপচয় হয়। এর প্রভাবে স্মরণশক্তির লোপ পেতে শুরু করে।
v
নিজের বা অন্যের লজ্জাস্থানের দিকে তাকানো।
এটি একটি বড় কারণ স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার। টিভি সিনেমায় উলঙ্গ ও অর্ধ উলঙ্গ ছবি,ভিডিও দেখা
v বেগানা মহিলা/পুরুষের দিকে তাকানো এবং জিনা ব্যাভিচারে
লিপ্ত হওয়া।
v
অধিক হাসাঃ
মানুষের জন্য হাসি প্রয়োজনীয় হলেও অধিক হাসি অপ্রয়োজনীয়। অধিক হাসির কারণে মানুষের অন্তর মরে যায় এবং কাজের একাগ্রতা কমে যায়।
v
ইস্তিঞ্জার জায়গায় অজু করাঃ
অর্থাৎ যেখানে আমরা প্রস্রাব করি সেখানেই অজু করা একুটু দূরে সরে না গিয়ে।
v
মসজিদে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা
এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া মসজিদ থেকে। সঠিক
নিয়ম হলো মসজিদে প্রবেসের সময় ডান পা দিয়ে ঢুকা এবং বাম পা দিয়ে বাহির হওয়া। আর
টয়লেটে ঢুকার ক্ষেত্রে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বাহির হওয়া।
v ময়লা আবর্জনা দেখা বা এর আশেপাশে অবস্থান করা।
v
কোনো ফলবান বৃক্ষের নিচে প্রস্রাব করা।
এটি অনেকের মতে খুবি খারাপ একটি কাজ। এর কারনে শুধু স্মৃতি শক্তি লোপ পায়না আরো অনেক রোগের কারণ বটে।
v অযথা গালিগালাজ করা ও অহেতুক রাগারাগি করা।
v দাঁড়িয়ে
পেসাব
করা।
এগুলো স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার কিছু কারণ। এখন আমরা জানবো কি করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। স্মৃতি শক্তি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য অমূল্য অম্পদ। সঠিক ভাবে এটি ব্যবহার করলে এটি স্থায়ী হয় এবং দিনে দিনে বাড়তে থাকে। কুরআন ও হাদিসে এমন কিছু কাজের কথা বলা আছে যেগুলো কেউ প্রতিনিয়ত করলে সুফল পাবেন ইনশাআল্লাহ। তবে অবার আগে যে কাজগুলো করতে হবে সেটি হলো উপরে উল্লেখিত কাজ গুলো থেকে বিরত থাকা পাশপাশি নিচের উল্লেখিত কাজ গুলো করা।
Ø স্মৃতশক্তি
বৃদ্ধি
করতে
যা
করতে
হবেঃ
Ø
দোয়ার মাধ্যমেঃ
দোয়া হলো মুমিনের অস্ত্রের মতো। একমাত্র দোয়া এবং আমাদের ভালো কাজের মাধ্যমে আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হতে পারে। তাই মুমিনের যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য প্রথমে দোয়া করা উচিত। স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির জন্য এই দো সকাল সন্ধ্যায় বেশি বেশি পাঠ করা এবং প্রয়োজনীয় দোয়া করা আল্লাহর কাছে। দোয়াটি হলো>
“রাব্বি জিদনি ঈলমা” অর্থ>
হে আমার পালন কর্তা
,আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন।
(সূরা ত্বহাঃ আয়াত ১১৪)
Ø
গোনাহ থেকে বিরত থাকাঃ
স্মৃতিশক্তি
বৃদ্ধির জন্য সবার আগে যে কাজটি
করতে
হবে সেটি হলো নিজেকে গোনাহ থেকে বিরত রাখা। ইমাম আবু হানিফা রহঃ আঃ কে একবার এক লোক প্রশ্ন করেছিলেন যে কিভাবে তিনি তার স্মৃতিহক্তি বৃদ্ধি করবেন তখন ইমাম আবু হানিফা বলেছিলেন তিনি যেন সকল গোনাহ থেকে নিজেকে হিফাজত করেন। আরেক বর্নায় এসেছে, হজরত ইয়াহিয়া বিন ইয়াহইয়া বলেন,”এক ব্যাক্তি মালিক ইবনে আনাসকে প্রশ্ন করেছিলেন , হে আল্লাহর বান্দা আমার স্মৃতশক্তি শক্তিশালী করে দিতে পারে এমন কোনো কিছু কি আছে? তিনি বলেন, যদি কোনো কিছু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারে তা হলো পাপ কাজ ছেড়ে দেয়া। (আল-খাতিব আল-জামি)
Ø
যথাসম্ভব নির্জনতা
অবলম্বন করাঃ এটি এই কারণে জরুরি যে একা একা থাকলে আপনি চিন্তা করতে পারবেন বেশি। তখন যাই করবেন মনোযোগ দিয়ে
করতে
পারবেন।
সঠিক মনোযোগ ছাড়া ভালো কিছু অর্জন করা যায়না। এই জন্য মাঝে মাঝে নির্জনে বসে মনোযোগ দিয়ে কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করা উচিত।
Ø
চোখের হিফাযত করাঃ
এটি জরুরি একটি কাজ। আমরা যখন এদিক এদিক তাকাই তখন আমাদের মনোযোগ ও এদিক এদিক চলে যায়। এতে কোনো কিছুতে একনিষ্ঠ ভাবে মনোযোগ দেয়া সম্ভব হয়না। এছাড়াও চোখ হলো গোনাহ বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ। চোখ কে যতো হিফাযত করতে পারবো ততই গোনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারবো।
Ø
কুর’আন পড়াঃ বেশি
বেশি কুর’আন পড়া ত সাওয়াব বটেই সাথে এটি স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করে। সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয় যদি কুর’আন থেকে কিছু সূরা মুখস্থ করা হয়। কুর’আন মুখস্থ করলে ব্রেইন আল্লাহর পক্ষ থেকে শাণিত হয় এবং বুঝে বুঝে অর্থ সহ পড়লে মন ভালো থাকে।
Ø
লাগাতার চেষ্টা অব্যাহত রাখাঃ
আমরা যখন কোনো কিছু লাগাতার করি এর সুফল ভালো হয়। লাগাতার কোনো কিছু না করে ভালো কিছু অর্জন করা যায়না। নিরলসভাবে চেষ্টা চালালেও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) ইমাম ইউসুফকে বলেছিলেন ,’তুমি মেধাহীন ছিলে কিন্তু ক্লাসে তোমার উপস্থিতি ও চেষ্টা তোমাকে মেধাবী করেছে।
Ø
নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ কথায় আছে সুস্থ দেহে সুন্দর মন। ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য খুবি উপকারি তা আমরা জানি। প্রত্যহ ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে এবং মানুষকে কর্মক্ষম করে তুলে। তখন পড়াশুনায় মনোযোগ ভালো থাকে ।
Ø
কম খাওয়াঃ
অতিরিক্ত যেকোনো কিছুই আমাদের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় । বেশি খাওয়ার ফলে আমাদের কাজের একাঘ্রতা বিনষ্ট হয়। কাজে মনোযোগ থাকে না,অলসতা চলে আসে।
এছাড়াও
এটি বিজ্ঞানসম্মত যে অতিরিক্ত খাবার আমাদের ব্রেইনে চাপ প্রয়োগ করে। হাদিসেও এসেছে যে আমাদের পেটের দুই ভাগ খাবার খাওয়া, এক ভাগ পানি দ্বারা পূর্ণ করা আর বাকি এক ভাগ খালি রাখা।
Ø
পড়ার সময় নিজস্ব পদ্ধতি অবলম্বন করাঃ আমরা অনেকে অনেক ভাবে পড়ে থাকি। সবার পড়ার ধরণ এক নয়। কেউ শুয়ে পড়েন আবার কেউ বসে পড়েন আবার কেউ হেটে হেটে পড়েন । আবার অনেকে আসতে আসতে পড়তে পছিন্দ করেন আবার কেউ উচ্চস্বরে পড়তে ভালোভাবেন। প্রত্যেকের ই নিজের পদ্ধতি আছে যেভাবে পড়লে দ্রুত পড়া মুখস্থ হয়। আপনিও আপনার মতো করে [পড়ুন এতে দ্রুত মুখস্থ হবে।
Ø
যা জানি তা অন্যকে শিখানোর চেষ্টা করাঃ
আমরা যা নিজে পারি অন্যকে তা শিখানোর মাধ্যমে আমাদের নিজেদের ও প্র্যাক্টিস হয়ে যায়। এর জন্য আলাদা আমাদের বসে সময়ব দেয়া লাগে না। তাই আমাদের পঠিত বিষয়গুলো মনে রাখার জন্য অন্যকেও শিখান উচিত, এতে করে দুজনের ই লাভ হবে ।
Ø
যতাযথ বিশ্রাম নেয়াঃ
বিশ্রাম শুধু শারীরিক ই নয়, মাঝে মাঝে আমাদের উচিত নিজের ব্রেইন কেও বিশ্রাম দেয়া। মাঝে মধ্যে নিজেকে সব রকমের চিন্তা মুক্ত রেখে নির্জনে নিরব থাকা। অথবা ঘুমানো অল্প সময়ের জন্য।
Ø
আল্লাহর উপর ভরসা রাখাঃ
আমাদের মাথায় এটা সবসময় গেথে নিতে হবে যে আমাদের সব সমস্যা সমাধান কারী একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। তাই আল্লাহর উপর ভরসা করে নিজের চেষ্টা অব্যাহত রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া এবং দোয়া করা। এই বিশ্বাস রাখতে হবে একঅমাত্র আল্লাহ চাইলেই আপনাকে মুক্তি ব্দিতে পারবেন।
Ø
সবসময় হাসিখুশি থাকাঃ
হাসিখুশি থাকলে আমরা টেনশন মুক্ত থাকতে পারি। অতিরিক্ত টেনশন বা বাজে চিন্তা মানুষকে বিপথে নিয়ে যায় এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম থেকে দূরে রাখে। তাই চেষ্টা করতে হবে চিন্তামুক্ত থাকা এবং মিষ্টি ভাষায় কথা বলা। এতে করে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
Ø
দুপুরে খাওয়ার কিছুক্ষন পর ঘুমানোঃ
দুপুরে খাওয়ার কিছুক্ষণ পর শুয়ে থাকা ভালো একটি গুন এতে করে ব্রেইনের চাপ কমে এবং চিন্তা ও কাজে একাগ্রতা আসে। এর আরেকটি উপকারিতা হলো মেধা বাড়ে।
Ø
কালজিরা ,নারিকেল, তিলের তৈল ব্যবহার করাঃ
কালোজিরার তৈল কতটা উপকারি আমরা সবাই জানি। হাদিসে এসেছে মৃত্যু ব্যাতীত প্রায় সকল রগের ঔষধ হিসেবে এটি কাজ করে। পাশাপাশি নারিকেল তৈল ও তিলের তৈল মাথায় দিলে মাথা ঠান্ডা থাকে এবং মেধা বাড়ে।
Ø
মিসওয়াক করাঃ নিয়মিত মিসওয়াকের রয়েছে অনেক উপকারিতা এবং সাওয়াব। যাদের মুখে গন্ধ হয়,দাতে সমস্যা তারা নিয়মিত মিসওয়াক করলে এসব সমস্যা দূর হয় এবং মেধা বাড়ে।
Ø
রাসুল সাঃ এর উপর দুরুদ পড়াঃ
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল মেধা বাড়াতে। বেশি বেশি দুরুদ পড়লে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি আরো অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, তাছাড়া দোয়া কবুলের জন্য দুরুদ শরীফ পাঠ অনেক কার্যকরী।
Ø
কোনো বিষয় মুখস্থ করতে চাইলে
প্রথমে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। তবে মুখস্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো মাগরিবের পর অথবা ফজর নামাজের পর অথবা মাঝ রাতে কিংবা রাতের শেষ ভাগে। কেননা এই সময় মানুষের মস্তিষ্ক অনেকটাই চিন্তা মুক্ত থাকে। যারা কুর’আন হিফয করেন তারা সাধারনত এই সময়েই হিফয করে থাকেন।
Ø স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়মিত তাসবিহ ও দোয়াঃ
1.
তিনবার সূরা মুজ্জাম্মিল পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে এই পানি পান করা।
2.
প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের পর একবার ফাতেহা ,তিনবার সূরা ইখলাস এবং ১১ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করে মুনাজাত করে প্রথমে নবীজীর প্রতি ও ক্রমানুসারে অকল মুসলমানদের জন্য সাওয়াব পৌছিয়ে নিজের গোনাহের জন্য মাফ চেয়ে স্মরনশক্তি বৃদ্ধির জন্য দোয়া করা।
3.
নিয়মিত ‘ইয়া রাহমানু’ ইয়া রাহিমু’ পাঠ করা সকাল সন্ধ্যায়।
4.
ফজর নামাজের পরপর খালি পেটে কয়েকবার দুরুদ শরীফ পাঠ করে ৪১ বার “ইয়া আলিমু” পাঠ করে আবার কয়েকবার দুরুদ পাঠ করে এক গ্লাস পানিতে ফুঁ দিয়েীই পানি পান করা সুন্নত নিয়মে।
v যেসকল খাবার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য সহায়তা করেঃ
1. মধু
পান
করা
নিয়মিত
বিভিন্ন
খাবারের
সাথে।
2. বাদাম
খাওয়া
বা
মাখনে
বেঝে
বাদাম
খাওয়া।
3. ঘি
খাওয়া।
4. হালাল
জন্তুর
ঘাড়ের
গোশত
খাওয়া।
5. মিষ্টি
আপেল
খাওয়া।
6. গরম
ভাত
খাওয়া।
7. মিষ্টি
ডালিম
খাওয়া।
8. নিয়মিত কিশ্মিশ খাওয়া।
9. দুধ-ডিম খাওয়া।
10. কাজু
বাদাম
খাওয়া।
11. এন্টি
অক্সিডেন্ট
সমৃদ্ধ
খাবার
খাওয়া। যেমন তাজা শাক-সব্জি ,ফল-মূল অর্থাৎ পাকা পেপে,আনারস,কমলা,লেবু,জাম,আতা,পেয়ারা,ডালিম,গাজর,জাম,ফুলকপি,বাধাকপি,লাল শাক,পালন শাক, ইত্যাদি প্রচুর পরিমানে নিয়মিত খাওয়া।
12. কফি,চা পান করা তবে পরিমিত।
13. আয়রন
সমৃদ্ধ
খাবার
খাওয়া;
যেমন
; শস্য
দানা,ভুট্যা,শিমের বিচি,ডাল,কচু শাক, ও গাড় শাক-সবজি।
এছাড়াও
এক
কাপ
গরম
পানিতে
৩/৪ গ্রাম খেসারীর ডাল ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করা।
14. সকালে
খালি
পেটে
অল্প
পরিমান
মধু
সামান্য
জাফরানের
সাথে
মিশিয়ে
পান
করা।
15. বিশুদ্ধ
পানি
।
16. পাকা
কলা।
17. গ্রীন
ট্রি।
18. মাছ।
19. টমেটু।
·
উপরে যা লিখা হলো এগুলো হচ্ছে একটি মাধ্যম এছাড়া আর কিছুইনা । স্মৃতি,মেধা যাই বলি আমরা এটি আল্লাহ কাউকে না দিলে কোনো ভাবেই পাওয়া সম্ভব না। তাই জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আমল করলে, চেষ্টা অব্যাহত রাখলে ধৈর্য ধারণ করে সামনে এগিয়ে গেলে গোনাহ থেকে বেচে থাকলে আল্লাহ কাউকে হতাশ করবেন না।
·
একটি আর্জি , এই লিখাটি যদি মনে হয় আপনাকে কোনোভাবে উপকার করবে বা করেছে তাহলে লিখাটি আপনার বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ রইলো। হয়তো আপনার বন্ধু বা পরিচিত ভাই বন এমন একটি সমস্যায় পরে চিন্তায় দিন বকাটাচ্ছেন কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। ক্ষমা প্রার্থী এই লিখায় যদি কোনো ভুল হয়ে থাকলে।