সামরিক সক্ষমতায় চীন নাকি ভারত এগিয়ে? Who is more powerful between China and India in Arm Forces ?

সামরিক সক্ষমতায় চীন ও ভারত। কার অবস্থা কেমন?



পাকিস্তানের মত চীনের সাথেও সীমানা নিয়ে  দ্বন্দ রয়েছে ভারতের। পাকিস্তান ভারত সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও বর্তমানে চীন ও ভারতের সাথে চলছে সীমানা নিয়ে দ্বন্দ।  চীন ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৩৫০০ কি.মি. এর মতো সীমানা (ম্যাকমোহন লাইন) রয়েছে। আর আগেও সীমানা বিরোধ নিয়ে যুদ্ধ হয়েছে এ দু দেশের মধ্যে। সীমান্ত দ্বন্ধের যুদ্ধে ১৯৬২ সালের সেই যুদ্ধে ভারতকে পরাজিত করে চীন। এরপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বিভিন্ন সীমান্ত জটিলতা অমিমাংসিত রয়ে গেছে তাদের মধ্যে। গত ১৫ই জুন পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় গালওয়ান উপত্যকায় চীন ও ভারতের সীমান্তবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। যার ফলে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয় দুই দেশের সীমান্তে। শুরু এক দেশ আরেক দেশকে হুমকি দিয়া। একের পর এক চলতে থাকে ছোট খাট যুদ্ধ। পরবর্তীতে ৯৬ ঘন্টার শান্তি বৈঠক হলেও তাতে কোন সুফল বয়ে আসে নি। দু দেশ দু দেশকে থোড়াই কেয়ার করছিল না। পাল্লা দিয়ে সীমান্তে সৈন্য বাড়াচ্ছিল দু দেশ। এর ফলে চিন্তার বিষয় হয়্র দাড়ায় যে  দু দেশের সামরিক সক্ষমতার প্রশ্ন। কথা আছে না "কান টানলে মাথা আসে'

তবে চলুন দেখা যাক কার সামরিক সক্ষমতা কেমন-

১....দুই দেশের মিলিটারি বাজেট-

*ভারত- ৫৫.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

*চীন- ২২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ( যেখানে ভারতের প্রায় ৪ গুন বেশি চীন)

২....সামরিক সক্ষমতার দিক দিয়ে বিশ্বে অবস্থান-

*ভারত- ৪র্থ

*চীন- ৩য়

৩.... সক্রিয় সেনা সদস্য।

*ভারত- ২১ লক্ষ ৪০ হাজার

*চীন- ২৩ লক্ষ

৪....ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান-

*ভারত- ৪৪২৬ + ৫৬৮১ টি

*চীন- ৭৭৬০ + ৬ooo টি

৫....এয়ারক্রাফট-

*ভারত- ২২১৬ টি

*চীন- ৪১৮২ টি

[এর মধ্যে ভারতের যুদ্ধবিমান রয়েছে-৩২৩ টি ও চীনের যুদ্ধ বিমান রয়েছে- ১১৫০ টি। তুলনা রীতিমতো হাস্যকর]

৬....ফাইটার জেট -

ভারত- ৫৫০ টি

চীন- ১৬০০ টি

[চীনের ফাইটার জেট চেংদু, ইউরোকপ্টার, হারবিন, নাঞ্চাং এর তুলনায় ভারতের ফাইটার জেট মিরেজ, হাল তেজাস, এন্টোনভ যেন খেলনা বিমান]

৭...হেলিকপ্টারের সংখ্যা প্রায় দেড়গুন চীনের (ভারতের ৭২৫ টির বিপরীতে চীনের আছে ১১৫০ টি)

৮... নৌ-বহরে চীনের কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী ভারত। ভারত চীনের থেকে এখানে যোজন-যোজন পিছিয়ে

*ভারত- ২ টি বিমানবাহী রণতরী, ১৫ টি সাবমেরিন, ১১ টি ডেস্ট্রয়ার, ১৫ টি ফ্রিগেট, ২৪ টি কর্ভেট, ২ টি অফশোর পেট্রোল ভেসেল, ৩ টি পেট্রোল ভেসেল, ১ টি টর্পেডো রিকভারি ভেসেল, ৩ টি সার্ভে ভেসেল, ৩ টি ট্রেইনিং ভেসেল, ৩ টি অক্সিলারি ফ্লিট ও ১০ টি টাগবোট

* চীন- ২ টি বিমানবাহী রণতরী, ৫৪ টি ফ্রিগেট, ৭১ টি কর্ভেট, ৩৬ টি ডেস্ট্রয়ার, ৩৬ টি মাইন কাউন্টারমেসার ভেসেল, ৮ টি অ্যাম্ফিবিয়াস ট্রান্সপোর্ট ডক, ২৩২ টি অক্সিলারি ফ্লিট, ১০৯ টি মিসাইল বোট, ৯৪ টি সাবমেরিন চেসার, ১৭ টি গানবোট, ১ টি হসপিটাল শিপ ও ৭৬ টি সাবমেরিন (এর মধ্যে ৭ টি ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন ও ১২ টি নিউক্লিয়ার অ্যাটাক  সাবমেরিন)

অবশ্য প্রথাগত সমরাস্ত্র নয়, সংঘাতের সম্ভাবনা জাগলে সবার আগে আসে পরমাণু শক্তি

*ভারত- ১৩০ টি

*চীন- ৩২০ টি

ভারতের বহরে আছে ব্রাহ্মস, অগ্নী, ধানুশ, পৃথ্বী, কালি-৫০০০, প্রহার, প্রগতি সহ আরো অনেক ব্যালিস্টিক মিসাইল। চীনের বহরে আছে সি জে ১০, সি জে ১০০, ডি এফ ১৬, ডি এফ ১৭, ডি এফ ২১ এ, ডি এফ ২১ সি, ডি এফ ২১ ডি, ডি এফ ২৬, জে এল ২, ডি এফ ৩১, ডি এফ ৩১ এ, ডি এফ ৪১, ডি এফ ৫ সহ আরো অনেক ব্যালিস্টিক মিসাইল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ভারতের সর্বোচ্চ পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল হচ্ছে অগ্নি-৩ ও অগ্নি ৫। যেগুলোর পাল্লা হচ্ছে যথাক্রমে ৫০০০ কি.মি ও ৮০০০ কি.মি। অন্যদিকে চীনের সর্বোচ্চ পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল হচ্ছে ডি এফ ৫ ও ডি এফ ৪১। যেগুলোর পাল্লা হচ্ছে যথাক্রমে ১৩,০০০ কি.মি. ও ১৫,০০০ কি.মি.

অর্থাৎ, ব্যালিস্টিক মিসাইলে ভারতকে যেন দুই টাকার দামও দেয়না চীন। কথাটি তিতে হলেও সত্য।

আসলে কোন দেশই চায় না অন্য দেশের সাথে যুদ্ধ শুরু হোক। কারণ একটি যুদ্ধের ফলে দেশের যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তা পূরণ করতে কয়েক দশক এমনকি কয়েক শতকও লেগে যেতে পারে। আমরা সাধারণ জনগণ শান্তি চাই। চীন ও ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের সমাপ্তি হোক, এটাই আমাদের দাবি।


Post a Comment

Previous Post Next Post