যে কারণে ভর্তিচ্ছুদের প্রথম পছন্দ হতে পারে আরবি বিভাগ_আরবি বিভাগ রিভিউ_Arabic subject review
আরবি ভাষা ও সাহিত্য এরাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড লিটারেচার- Arabic language and literature.review
আরবি সাবজেক্ট রিভিউ এবং ক্যারিয়ার- Arabic Subject review |
তাই এ সমস্ত গুরুত্বের কারণে ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্র-ছাত্রীরা আরবিকে প্রথম সারিতে রাখতে পারে।
আরবি ভাষা ও সাহিত্যের গুরুত্ব :
মিশরের এই যুগে বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা হচ্ছে আরবি। যেমন আলজেরিয়া, বাহরাইন, চাঁদ,কমোরোস, জিবুতি, মিসর, ইরিত্রিয়া, ইসরাইল,কাতার,জর্ডান,কুয়েত,লেবানন, লিবিয়া,মৌরতানিয়া,মরক্কো, ওমান,কাতার,সৌদি আরব,সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া,তিউনিসিয়া, সংযক্ত আরব আমিরাত,ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, সিরিয়া।
এসব আরব দেশ ছাড়াও তুর্কি মালয়েশিয়া ও সেনেগাল এ ভাষার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া,জাপান, কোরিয়ার মতো দেশ সমূহে আরবি সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ এর মর্যাদা পেয়েছে।
আমাদের প্রতিবেশী অমুসলিম দেশ ভারতেও এ ভাষার চর্চা ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে বর্তমানে। বিশ্বের ৪২২ মিলিয়ন আরব জনগোষ্ঠী এবং দেড়শ কোটির বেশি মুসলিম তাদের দৈনন্দিন জীবনে এ ভাষা ব্যবহার করেন।
জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন,ওয়াইসি সহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিসিয়াল ভাষা হল এই আরবি। এই ভাষার ব্যবহার এতই বেশি যে এ ভাষা অনরব দেশেও প্রায় প্রতিটি পণ্যের মোরকে মোরকে শোভা পায়। আমাদের দেশের পণ্যেরও গুণগত মান ও বিজ্ঞাপন সংবলিত আরবী লেখা দেখা যায় ২ টাকার বিস্কিটের প্যাকেটেও।
এছাড়াও সাহিত্যের গুরুত্বের বিচারেও এই ভাষার ব্যবহার এবং গুরুত্ব বিশ্বের অন্যান্য প্রধান ভাষার গুলোর মতোই। এছাড়াও বলা হয়ে থাকে আরবি ভাষা পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাষা। এই ভাষার সাহিত্যরস, সাহিত্যসম্ভার,সাহিত্যের উপাদান পরিধি ব্যাপক। তাই আরবী ভাষা বাদি দিয়ে বিশ্বসাহিত্য ভাবা যায়না। এটি বিশ্বসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
যেই বিষয় গুলো পড়ানো হয় আরবি বিভাগেঃ
আরবি বিভাগ হচ্ছে মূলত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ। ইংরেজি এবং আরবি যেমন একটি সাবজেক্ট এবং যে যে পার্ট গুলো পড়ানো হয় ভাষা এবং সাহিত্যের একইভাবে আরবি বিভাগেও পড়ানো হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ আরবি ভাষা শিখানো হয়। একই সাথে আরবি সাহিত্যের বিশাল অংশের গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ অংশ গুলো ধাপে ধাপে পড়ানো হয়। ভাষা পড়ানোর সাথে সাথে কুরআন ও হাদিসের কিছু অংশ পড়ানো হয়।এছাড়াও দেশের চাকুরির বাজারের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ বিষয়াবলি,আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, তথ্যপ্রযুক্তি, ইতিহাস,ইসলামিক অর্থনীতি, মুসলিম আইন, বাংলা,ইংরেজি এবং আরো কিছু বিষয় গুরুত্বের সাথে পড়ানো হয়।
আরবি বিভাগ থেকে পড়ে চাকুরির ক্ষেত্রসমূহঃ
১। বিসিএসঃ আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের মতো বিসিএস একটি স্বাভাবিক বিষয়। সবার জন্য উম্মুক্ত এটি। এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ক্যাডার হিসেবে যোগদানের অনেক বেশি। বাংলাদেশ সকল মাদ্রাসা, জাতীয়বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত অনেক কলেজই আরবি বিভাগ রয়েছে। তাই এসব কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়,মাদ্রাসায় অনেক সুযোগ থাকবে। নিচে এখানে দেখুন বিস্তারিত কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলজে আরবি বিভাগ রয়েছে....
২। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক:৩। কলেজ ও মাদ্রাসা:
এমপিও ভুক্ত কলেজ,ফাজিল,কামিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক হিসেবে যোগদানের সুযোগ। বাংলাদেশের এই ধরনের মাদ্রাসার এবং কলজের সংখ্যা অনেক বেশি। তাছাড়াও যেসব কলজে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় রয়েছে সেখানেও আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা যোগদানের সুযোগ পাবে। কিন্তু ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আরবি বিভাগের কলেজে পারবেনা।৪। ব্যাংক জবঃ
ইসলামিক ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের ইসলামিক শাখায় এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের রয়েছে অনেক বেশি চাহিদা। বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে এবং এগুলোর ইসলামিক শাখা রয়েছে।৫। আনসার,সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী তে যোগদানের সুযোগঃ
আরবি বিভাগ হচ্ছে অন্যতম একটি বিভাগ যেখান থেকে এসব বাহিনীর অফিসার পদে যোগদানের সুযোগ রয়েছে যা ইসলামিক স্টাডিজ বা অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থী সুযোগ কম।
৬। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও আরব দূতাবাসে চাকুরির সুযোগঃ
৭। বিদেশে চাকুরীঃ
যেহেতু আরবি ভাষা একটি আন্তর্জাতিক ভাষা তাই এটির চাহিদাও আন্তর্জাতিক ভাবে বিস্তৃত। কেউ যদি আরবির পাশাপাশি ইংরেজিতে সমান ভাবে দক্ষ হতে পারে তার জন্য রয়েছে অসম্ভব সম্ভাবনা এবং চাকুরির চাহিদা। এটির সম্ভাবনা এতই বেশি যে আমাদের পাশ্ববর্তী অমুসলিম দেশ ভারতের অনেক মানুষ আরবি শিখে আরব দেশ গুলোতে বড় বড় মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানি তে চাকুরী করছে বড় বড় পদে।
৮। বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগঃ
যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক একটি ভাষা এবং এটির চাহিদা রয়েছে তাই এই ভাষার কদর ও বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তাই এই ভাষার রয়েছে উচ্চশিক্ষার সুযোগ। প্রতিবছর সৌদি আরব,মিশর,কাতার ও তুর্কি সহ বিভিন্ন দেশে শুধুমাত্র আরবি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।এছাড়া এই ভাষা থেকে পড়ে অন্যান্য বিভাগেও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রয়েছে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে।
সো, কি নেই আরবি বিভাগে? এতো কিছুর পরেও কেন আরবি নিয়ে পড়বেনা না?
আরবি ভাষা শিখে কাজ করতে পারেন এমন কিছু ক্ষেত্র হলো-
অনুবাদ এবং ভাষান্তর পেশাগত কাজ: আরবি ভাষা শিখে আপনি সম্পূর্ণ পেশাদার অনুবাদ এবং ভাষান্তর করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরণের কাগজপত্র, ওয়েবসাইট, বই, এবং সাক্ষাৎকার ইত্যাদি এর জন্য ভাষান্তরকারী হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রমে সাহায্যকারী হিসেবে: আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আরবি ভাষায় কাজ করতে পারেন। বিপণন বা বিতরণ কেন্দ্র, আন্তর্জাতিক সম্মেলন বা সেমিনার, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি কার্যক্রম এবং বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপনি একজন আরবি ভাষার বলতে ও লেখতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
বিভিন্ন কোর্স সম্পাদক হিসেবে: আরবি ভাষা শিখে আপনি বিভিন্ন কোর্স বা পাঠক্রম সম্পাদ্ক হিসেবে কাজ করতে পারেন। অথবা নিজে কোর্স শুরু করতে পারেন কোন একটি প্লাটফর্ম করে।
বর্তমানে অনেক লেখক আরবি সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ বই বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করেন , আপনিও অনুবাদ করে বিক্রি করতে পারে।
বাংলাদেশের যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগ রয়েছে তার লিস্টঃ
বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশবিদ্যালয় যেখানে আরবি বিভাগ একটি শতবর্ষী একটি বিভাগ। এই বিশবিদ্যালয় থেকে বের হয়েছে হাজারো বড় বড় ব্যাক্তিবর্গ।১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
২। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,
৩। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,
৪।ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়।
৫। আন্তর্জাতিক ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয় চট্রগ্রাম।
দেশের যেসব (জাতীয়)কলজে আরবি বিভাগ রয়েছে তার তালিকাঃ
১। রাজশাহী কলেজ২। চট্রগ্রাম কলেজ
৩। কবি নজরুল কলেজ
৪। সরকারি আজিজুল হক কলেজ
৫। আনন্দ মোহন কলেজ
৬। ঢাকা কলেজ(অনিশ্চিত)