জাতিসংঘ এবং জাতিসংঘের গঠন
জাতিসংঘ গঠনের পটভূমি:
জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস ,অঙ্গসংগঠন ,সংস্থা এবং বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ |
আমরা জানি বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে মাত্র ২৫ বছরের ব্যবধানে পৃথিবীতে দুইটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয় প্রথমটি হয় ১৯১৪ সালে এবং দ্বিতীয়টি শুরু হয় ১৯৩৯ সালে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এসব যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। এ যুদ্ধ ছিল মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রায় বিরাট বাধা। সেজন্য যুদ্ধের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী চলেছে শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টা। তাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯২০ সালে গঠিত হয়েছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা লীগ অব নেশনস। কিন্তু বিভিন্ন দেশের স্বার্থপরতার কারণে এ সংস্থাটি স্থায়িত্ব লাভ করেনি। ফলে ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীকে গ্রাস করে। এ যুদ্ধে বিভিন্ন দেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। জাপান আনবিক বোমার আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। মারা যায় লাখ লাখ মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা দেখে বিশ্ববাসী শংকিত ও হতবাক হয়ে যায়। তাদের মনে দানা বাঁধে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা। এছাড়া তারা অনুভব করে মানব কল্যাণের জন্য যুদ্ধকে পরিহার করতে হবে। দেশগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসতে হবে। ফলে ১৯৪১ সাল থেকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হাতে নেয়। তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট-এর উদ্যোগে এবং বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের সাথে দীর্ঘদিন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ১৯৪৫ সালের ২৪ এ অক্টোবর তারিখে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ন্যায় অন্য কোনো যুদ্ধের ধ্বংসলীলা থেকে মুক্তির জন্য জাতিসংঘের জন্য হয়।
জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন
জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গসংস্থা বা অঙ্গসংগঠন রয়েছে মোট ৬টি। এগুলো হলো-
শাখাগুলো নিম্নরূপ:
ক) সাধারণ পরিষদ
খ) আন্তর্জাতিক আদালত
গ) অছি পরিষদ
ঘ) সচিবালয়
ঙ) অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
চ) নিরাপত্তা পরিষদ
জাতি সংঘের সাধারণ পরিষদঃ
এই পরিষদে বিভিন্ন সদস্য শাখায় নির্বাচন, বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয় প্রতিবছরে অন্ততঃ একবার অধিবেশন হয় এবং একজন সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে বাংলাদেশের হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
আন্তর্জাতিক আদালতঃ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সীমানাসহ যেকোন বিরোধ মীমাংসা করা এর কাজ। ২০১২ সালে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসীমা নিয়ে মায়ানমারের সাথে বিরোধে আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ নিজের পক্ষে রায় পায়।
জাতিসংঘের সচিবালয়ঃ
এটি সকল প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করে। জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব পর্তুগালের অ্যান্টনিও গুতারেস।
অছি পরিষদঃ
এর কাজ অস্থিভুক্ত এলাকাসমূহের তত্ত্বাবধান করা। উপনিবেশিক আমলে এই পরিষদের কাজ বেশি ছিল। বর্তমানে অছি পরিষদের কাজ নেই বললেই চলে
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদঃ
বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষ দায়িত্ব পালন করে এই পরিষদ। এর পাঁচটি সদস্য রাষ্ট্র হলো রাশিয়া, ফ্রান্স ও গণচীন। বাংলাদেশ দুইবার নিরাপত্তা পরিষদের অ দায়িত্ব পালন করেছে। বাংলাদেশের বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষার কাছে নিয়োজিত আছে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদঃ
এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেরেশর সামাজিক, অর্থনৈতিক সমস্যা যেমন-দারিদ্র্য, শিক্ষা, বেকারত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে থাকে।
বর্তমানে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা কত?
শুরুতে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা ছিল ৫১। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৯৩। জাতিসংঘের মহাসচিব হচ্ছে এর প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। নরওয়ের অধিবাসী ট্রিগভেলি ছিলেন জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব। বর্তমান (জানু-২০১৭ হতে) মহাসচিবের নাম অ্যান্টনিও গুতারেস । তিনি পর্তুগালের অধিবাসী।
জাতিসংঘের সদর দপ্তর কোথায়?
জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।
জাতিসংঘের পতাকা ডিজাইনঃ
জাতিসংঘের নিজস্ব পতাকা আছে। পতাকাটি হালকা নীল রঙের। মাঝখানে সাদার ভিতরে বিশ্বের বৃত্তাকার মানচিত্র রয়েছে। এর দুইপাশ দুইটি জলপাই পাতার ঝাড় দিয়ে বেষ্টিত।
জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা কয়টি?
জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা ছয়টি। এগুলো হলো আরবি, চাইনিজ, ইংরেজি, ফরাসী, রাশিয়ান লেগনিশ। জাতিসংঘের যেকোনো সভায় এই ছয়টি ভাষার যেকোনো একটি ব্যবহার করা হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাকি ভাষাগুলোতে অনুবাদ হয়ে যায়। তবে ইংরেজি ভাষার উপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়ে
জাতিসংঘ গঠনের উদ্দেশ্য ও মৌলিক নীতি কি?
জাতিসংঘ গঠনের উদ্দেশ্যঃ
বিশ্বশান্তি ও সহযোগিতার মহান লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপঃ
• শান্তির প্রতি হুমকি ও আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করে বিশ্ব শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা:
•জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলা।
•অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানব সেবামূলক সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তোলা;
•সকল উপনিবেশিক রাষ্ট্র ও জনগণকে স্বাধীনতা প্রদান করা।
জাতিসংঘের মৌলিক নীতিঃ
জাতিসংঘের সাতটি মৌলিক নীতি আছে। সদস্য রাষ্ট্রগুলো এগুলো মেনে চলার শর্তে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে থাকে। এ মূলনীতিগুলো হলোঃ
• জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র সমান মর্যাদা ও সমান সার্বভৌমত্বের অধিকারী হবে:
•সকল সদস্য রাষ্ট্রকে পরিপূর্ণ বিশ্বাসের সাথে জাতিসংঘ সনদের নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে;
•সকল সদস্য রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা করতে হবে;
•কোনো সদস্য রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করতে বা বল প্রয়োগের হুমকি দিতে পারবে না।
•সকল সদস্য রাষ্ট্র জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা মেনে নেবে এবং কোনো রাষ্ট্র এর বিরোধিতা করতে পারবে না;
•সদস্য নয় এমন কোনো রাষ্ট্র জাতিসংঘের মূলনীতির বিরোধিতা করলে সে বিষয়ে জাতিসংঘ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে;
•কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করবে না। তবে কোনো রাষ্ট্র যদি আগ্রাসী তৎপরতা চালায় তাহলে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
জাতিসংঘের কাজ কি?
জাতিসংঘ মানবতার কল্যান ও সদস্য রাষ্ট্রসমূহের উন্নয়নের লক্ষ্যে বহুমুখী কাজ করে থাকে। নিম্ন জাতিসংঘের কয়েকটি কাজ উল্লেখ করা হলো :
v
১; আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
২; আগ্রাসী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অবরোধ আরোপ করা।
৩; শান্তিপ্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধ বন্ধের জন্য শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা ।
৪; আঞ্চলিক সংস্থাসমূহের সহযোগিতা গ্রহণ করা।
৫;সদস্যরাষ্ট্রসমূহের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বেকার সমস্যার সমাধান, কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং পুনর্বাসন, সেবা ইত্যাদি কল্যাণমূলক কাজ করা।
আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তি করা।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের ভূমিকা কি?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের উপর দাঁড়িয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি থেকেই জন্ম নিয়েছিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার একটি প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জাতিসংঘ সফলতা অর্জন করেছে। আবার কোথাও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তা সত্ত্বেও এর অবদান উল্লেখযোগ্য। জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় অবদান হলো এটি প্রতিষ্ঠার পর বিশ্বে আজ পর্যন্ত কোনো বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয় নাই। এটি প্রতিষ্ঠার পূর্বে মাত্র ২৫ বছরের ব্যবধানে দুইটি বিশ্ব যুদ্ধ পৃথিবীকে গ্রাস করেছিল। জাতিসংঘের একটি অন্যতম সংস্থা 'নিরাপত্তা পরিষদ'। বিশ্ব শান্তি রক্ষার প্রধান দায়িত্ব নিরাপত্তা পরিষদের। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রয়োজনে নিরাপত্তা পরিষদকে যে কোনো সম্মিলিত ব্যবস্থা গ্রহণে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। ফলে বিশ্বের কোথাও কোথাও আন্তর্জাতিক শান্তি বিরোধী কোনো কাজ সংঘটিত হলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালায়। এভাবে জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি রক্ষায় ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশ্বের অনেক দেশেই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘদিনের গৃহ যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতা অর্জন, এর একটি অন্যতম উদাহরণ। এছাড়া বিভিন্ন দেশে এবং অঞ্চলে বিরাজমান আর্থ-সামাজিক সমস্যা, মানবাধিকার লংঘন ইত্যাদিও বিশ্ব শান্তি নষ্ট করে। তাই জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ, সংঘাত নিরসনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিচে সংক্ষেপে জাতিসংঘের এ জাতীয় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
বিভিন্ন দেশের মধ্যে কোনো কারণে যুদ্ধ সংঘাত দেখা দিলে অথবা একই দেশের অভ্যন্তরে কোনো সংঘাত সৃষ্টি হলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে সে দ্বন্দ্ব সংঘাত দূর করার উদ্যোগ নেয়।
এ লক্ষ্যে বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণ করে। কখনও সরাসরি আক্রমণ চালায়।
বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম সমস্যা পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন। বিশ্ব পরিবেশ রক্ষায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতিসংঘ কাজ করে যাচ্ছে।
বিশ্ব শান্তির একটি অন্যতম দিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার মাধ্যমে।
জাতিসংঘ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
নিরক্ষরতা মানবজাতির জন্য অভিশাপ। বিশ্বকে নিরক্ষরতা থেকে মুক্ত করার জন্য জাতিসংঘ ইউনেস্কো, ইউনিসেফ এর মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
বিশ্বের অনেক দেশ দারিদ্র্য ও ক্ষুধার বেড়াজালে আবদ্ধ। এটি শান্তির পথে বিরাট বাধা। তাই পৃথিবী থেকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নিরসনে জাতিসংঘ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।
এছাড়াও জাতিসংঘ বিশ্ব জনসংখ্যা সমস্যার সমাধান, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন, উদ্ভ্রান্ত সমস্যার সমাধান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছে। এসকল কর্মকাণ্ড বিশ্বশান্তি রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
জাতি
সংঘ এবং বাংলাদেশঃ
বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ১৩৬ তম দেশ হিসেবে।
যোগদানের এক সপ্তাহ পর ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
বিশ্ব শান্তিরক্ষা বাহিনীতে বাংলাদেশের ভূমিকাঃ
বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর একটি অন্যতম সদস্য দেশ। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সদস্যপদ লাভ করার পর থেকেই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সতিনা ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ সর্বপ্রথম ১৯৮৮ সালে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য প্রেরণ করে।
২০১৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী (সশস্ত্রবাহিনী) এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্য মিলে ৪০টি দেশে ৫০টি মিশনে কাজ করছে। এ পর্যন্ত যে সমস্ত দেশে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা বাহিনী কাজ করছে সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি দেশের নাম উল্লেখ করা হলো : কংগো, হাইতি, আইভোরি কোস্ট, পূর্বতিমুর, ইরাক, কুয়েত, নামিবিয়া, সুদান, * সিয়েরালিয়ন, পশ্চিম সাহারা, মুজাম্বিক, রুপান্ডা, কম্বোডিয়া, সোমালিয়া, উপাত্তা, জর্জিয়া, সিরিয়া, লাইবেরিয়া আফগানিস্তান প্রভৃতি। ২০১৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে মোট ১,৫৭,০৫০ জন সদস পাঠিয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রথম স্থান দখল করে আছে। বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা বিশ্ব শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। এ সুনাম অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে নতুনভাবে পরিচিত করছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে অংশগ্রহণ ও সুনাম অর্জনের পাশাপাশি বাংলাদেশকে অবশ্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ২০১৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে অংশ গ্রহণ করে ১২৪ জন সদস্য বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও শান্তিরক্ষার যুদ্ধে নিহত হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশিরা সর্বোচ্চ কৃতিত্ব প্রদর্শন করছে। বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর কেবল পুরুষ সদস্যই নয়, মহিলা সদস্যও দক্ষতা এবং সাহসিকতার সাথে অংশগ্রহণ করছে ও বিদেশের মাটিতে যথেষ্ট সুনাম কুঁড়িয়েছে।
আসলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর অবস্থান উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো। এ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে কমান্ডার হিসেবে ও ঊর্ধ্বতন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশের ভূমিকার আরেকটি স্বীকৃতি, যা বিশ্বে দেশের মর্যাদা অনেক বৃদ্ধি করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ দেশকে অর্থনৈতিকভাবেও সমৃদ্ধ করছে।
এক
নজড়ে জাতিসংঘঃ
জাতি সংঘ কত সালে গঠিত হয়?
১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া লীগ অফ নেশন পরবর্তীতে বিলুপ্ত হয়ে ২৪ অক্টোবর ১৯৪৫ সালে ৫১ টি দেশের জাতিসংঘের সনদে সাক্ষরতার মাধ্যমে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব কে 2022?
পরতুগালের নাগরিক এবং রাজনীতিবিদ অ্যান্টোনিও গোতারেস হলেন বর্তমান মহাসচিব ।
বাংলাদেশ কত সালে জাতিসংঘের সদস্য হয়?
বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ১৩৬ তম দেশ হিসেবে।
যোগদানের এক সপ্তাহ পর ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন।
বর্তমানে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র সংখ্যা কত?
১৯৩ টি এবং পর্যবেক্ষক সদস্য দেশ ২ টি।
জাতিসংঘ দিবস কোনটি ?
২৪ অক্টোবর
জাতিসংঘ কত সালে বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে ঘোষণা করে?
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
জাতিসংঘের
দাপ্তরিক বা অফিশিয়াল
ভাষা কয়টি?
৬ টি, আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি,রুশ, স্পেনীয়।
জাতিসংঘের সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত?
ম্যানহাটন, নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য (ভেটো ক্ষমতা সম্পন্ন) দেশ রয়েছে ৫টি। এগুলো হলো-
·
যুক্ত্রাষ্ট্র
·
বৃটেন
·
ফ্রান্স
·
চীন
·
রাশিয়া
- জাতিসংঘ সনদ pdf
- জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল
- জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস
- জাতিসংঘের সর্বশেষ সদস্য
- জাতিসংঘের মূল সংস্থা কয়টি
- জাতিসংঘ কি বাংলা
- জাতি সংঘ কত সালে গঠিত হয়?
- জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব কে 2022?
- জাতিসংঘের সংস্থা সমূহ কি কি?
- রাষ্ট্রসংঘ দিবস কবে পালন করা হয়?
- জাতিসংঘ কবে গঠিত হয়
- জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা দিবস
- জাতিসংঘ ঘোষিত শান্তি দিবস কবে
- 24 অক্টোবর কি দিবস
- জাতিসংঘের মূল সংস্থা কয়টি
- জাতিসংঘ নিয়ে সাধারণ জ্ঞান
- জাতিসংঘের জনক কে
- জাতিসংঘ বাংলাদেশ
- জাতিসংঘের সদস্য দেশ কয়টি
- জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য কোন কোন দেশ
- জাতিসংঘের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
- জাতিসংঘের সংস্থা সমূহ
- জাতিসংঘের মূল সংস্থা কয়টি
- জাতিসংঘের সর্বশেষ সদস্য
- জাতিসংঘের জনক কে
- জাতিসংঘের কাজ কি
- জাতিসংঘ সনদ pdf
- জাতিসংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল
- জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস
- জাতিসংঘের সর্বশেষ সদস্য
- জাতিসংঘের মূল সংস্থা কয়টি
- জাতিসংঘ কি বাংলা
- জাতি সংঘ কত সালে গঠিত হয়?
- জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব কে 2022?
- জাতিসংঘের সংস্থা সমূহ কি কি?
- রাষ্ট্রসংঘ দিবস কবে পালন করা হয়?
- জাতিসংঘ কবে গঠিত হয়
- জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা দিবস
- জাতিসংঘ ঘোষিত শান্তি দিবস কবে
- 24 অক্টোবর কি দিবস
- জাতিসংঘের মূল সংস্থা কয়টি
- জাতিসংঘ নিয়ে সাধারণ জ্ঞান
- জাতিসংঘের জনক কে
- জাতিসংঘ বাংলাদেশ
- জাতিসংঘের সদস্য দেশ কয়টি
- জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য কোন কোন দেশ
- জাতিসংঘের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
- জাতিসংঘের সংস্থা সমূহ
- জাতিসংঘের মূল সংস্থা কয়টি
- জাতিসংঘের সর্বশেষ সদস্য
- জাতিসংঘের জনক কে
- জাতিসংঘের কাজ কি